Skip to content

রাস্তা কারও একার নয় – বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

ধর্ম যখন বিজ্ঞানকে বলে রাস্তা ছাড়াে!’ বিজ্ঞান কি রাস্তা ছেড়ে দেয়?

পােপের ভয়ে দেশান্তরী হয়েছিলেন লিওনার্দো দা ভিঞ্চি। সারাদিন
একটা অন্ধকার ঘরের মধ্যে পায়চারি করতেন গ্যালিলিও গ্যালিলেই ;
তাঁকে পাহাড়া দেবার জন্য বসে থাকতাে একজন ধর্মের পেয়াদা, যার
চোখের পাতা বাতাসেও নড়তাে না।
বিজ্ঞান কি তখন থেমে ছিল? তীর্থের পাণ্ডাদের হই হই, তাদের লাল
চোখ কি পেরেছিল পৃথিকে বেঞ্চের উপর দাঁড় করিয়ে, সূর্যকে
তার চারদিকে ওঠবােস করাতে?
ধর্ম যতদিন দুঃখী মানুষকে বেঁচে থাকার সাহস দেয়, ততদিন
রাস্তা নিয়ে কারও সঙ্গে তার ঝগড়া থাকে না। রাস্তা কারও
একার নয়।
বরং তাকেই একদিন রাস্তা ছাড়তে হয়, যার স্পর্ধা আকাশ
ছুঁয়ে যায়।
বিজ্ঞান যখন প্রেমের গান ভুলে ভাড়াটে জল্লাদের পােশাক গায়ে চাপায়, আর
রাজনীতির বাদশারা পয়সা দিয়ে তার ইজ্জত কিনে নেয়,
আর তার গলা থেকেও ধর্মের ষাঁড়েদের মতােই কর্কশ
আদেশ শােনা যায় : ‘রাস্তা ছাড়াে! নইলে –
পৃথিবীর কালাে সাদা হলুদ মানুষের গান, তাদের স্বপ্ন
এক মুহূর্ত সেই চিঙ্কার শুনে থমকে তাকায়।

তারপর যার যেদিকে রাস্তা, সেদিকে মুখ করেই তারা সামনে,
আরও সামনের দিকে এগিয়ে যায়।
কেউ কারােকে রাস্তা ছেড়ে দেয় না, যতদিন এই পৃথিবীতে গান থাকে,
গানের মানুষ থাকে, স্বপ্ন থাকে..

1 thought on “রাস্তা কারও একার নয় – বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়”

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।