Skip to content

ছোট মামার ডেডবডির পাশে দাঁড়িয়ে – প্রদীপ বালা

 

পায়ের বুড়ো আঙুলে জড়ানো চাবির রিং
সাইকেলটা একটু দূরে ঝোপের মধ্যে শোয়ানো
চটি দুটো সুন্দর করে জড় করে রাখা একপাশে
এই সবকিছু করে রেল লাইনে শুয়ে পড়েছিল ছোট মামা
হঠাৎ করে কারো মনে হতে পারে
রেল লাইনের সাথে গভীর ভালোবাসা ছিল তাঁর।

গত দিনই ফিরেছিলাম
গাড়ীতে ওঠার সময়
হাসিমুখ করে স্টেশন পর্যন্ত এগিয়ে দিয়েছিল
ছোটমামা
তারপর আর বাড়ি ফেরেনি

সকালে খবর পেতেই হন্তদন্ত হয়ে ছুটে গেছিলাম
একদিন আগের রৌদ্রকরোজ্জ্বল হাসিখুশি পরিবারের বদলে
দুমড়ে মুচড়ে যাওয়া একটা থমথমে ভাব
গভীর রাতের মত
গ্রাস করে নিচ্ছিল সবকিছু।
মাঝে মাঝে মেয়েদের আর্তচিৎকার
জানা গেল ছোট মামার সাথে
রেল লাইনের নয়
ভালোবাসা ছিল একটি মেয়ের

সন্ধ্যেবেলা লাশকাটা ঘর থেকে
ছোটমামার বডি আনা হল বাড়িতে
তাঁবু দিয়ে প্যাকিং করা
মাথার কাছে ধুপকাঠি জ্বালানো
রজনীগন্ধার স্টিক
অগুরুর গন্ধ।
বাড়ির মেয়েরা হাউ হাউ করে ছুটে গেছিল
আত্মীয়-স্বজন সবার চোখে জল
পাড়া-প্রতিবেশীর সান্ত্বনা বাক্য-
বড় ভাল ছেলে ছিল…
এক ডাকে সবার পাশে দাঁড়াত…

আমি সবার পিছনে দাঁড়িয়ে ছিলাম
দেখছিলাম
আকাশে অসংখ্য নক্ষত্রপুঞ্জ
আমি কাঁদিনি একটুও
ছোটমামা কোন বীরত্বের কাজ করেনি
যে তাঁর মত একজন মানুষ চলে গেলে
পৃথিবীর ক্ষতি হয়ে যাবে।
প্রেমে ব্যর্থ হয়ে আত্মহত্যা করা একটা ছেলেকে
আপনারা কি বলবেন?
নায়ক? ট্র্যাজিক নায়ক?
সত্যি বলছি আমার কিন্তু
ভেড়ুয়া বলে খিস্তি করতে ইচ্ছে করছিল।

 

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।