২
মাটির নীচে প্রাচীন কোনও খনি
আকাশে লাঠি ঠকঠকায় শনি
ইতিহাসের দু’পায়ে অভিশাপ
কপালে তবু নাচতে থাকে মণি
ফিরিয়ে দাও আমাকে তার দ্যুতি
যতই হােক ত্রুটি বা বিচ্যুতি
স্বাতীর জলে মুক্তো জন্মাবে
তখনও পচে মরবে অনুভূতি?
নাকি সে কোনও পায়ের ভেজা দাগ
বেরিয়ে এসাে মানুষখেকো বাঘ
মানুষহীন অন্য জঙ্গলে
রক্ত ছাড়া খেলতে হবে ফাগ
খেলতে হবে শরীর ছাড়া ছৌ
মহুয়া থেকে খসাতে হবে মৌ
বুঝতে হবে বাচ্চাগুলাে দেখে
জাতিস্মর হননি পিতরৌ
কংক্রিটের মস্ত ঘেরাটোপে
বেড়াল বসে তা দিয়ে যায় গোঁফে
হয়েছে শুধু বলির আয়ােজন
ধড় আর মাথা আলাদা এক কোপে
রাস্তা চলে ডিভাইডার নিয়ে
জুড়ছি তবু ইট-সিমেন্ট দিয়ে
দিচ্ছি প্রতিবাদের মতাে করে
পুতুল আর পুতুলানির বিয়ে
ছড়িয়ে পড়া কর্কটের দেশে
যেখানে কফ রক্তে এসে মেশে
মিশুক, ওরা আদরে মিশে যাক
ধ্বংস হােক নিমেষে, ভালবেসে
পচনশীল আমার দিনরাত
পচনশীল হাঁড়িতে চাপা ভাত
জ্যান্ত সব প্রেম আর পূজা নাকি
নিষ্ঠুরতা ঢাকার অজুহাত?
তাহলে পরে বন্ধ করো গান
বুলবুলিকে দিও না খেতে ধান
পৃথিবী যদি মানুষ হত শুধু
দেবতা আমি হতেই পারতাম
হয়নি, তাই হয়েছি আঁটকুড়াে
হাতের থেকে ওড়ে চকের গুঁড়ো
সামনে বুনাে মােষ বা ব্ল্যাকবাের্ড
আমারই মতাে ধ্বস্ত আর বুড়াে
নিজেকে তার দৃষ্টি দিয়ে দেখে
স্বপ্ন ঢেলে ঘেন্নাগুলাে মেখে
লিঙ্গ বিভাজনের জটিলতা
বােঝাৰ মুখে, বােঝাব না তাে এঁকে
আগুন লাগা ট্রেনের কামরায়
ঝুলতে থাকা তপ্ত চামড়ায়
আঁকব আমি আমার ডিজাইন
রাধাকে ফেলে পালানাে শ্যামরায়
পালাতে গিয়ে সেও তাে দিশেহারা
নিজের কাছে নিজেই বাঁধে নাড়া
পরক্ষণে খুলতে থাকে সুতাে
তােমার ঘর কোথায় বানজারা?
হারিয়ে যদি ফেলেছ নিঃঝুমে
খুঁজো না, আর খুঁজো না বাথরুমে
উঠলে পরে নামতে হবে নীচে
জাগলে ঢলে পড়তে হবে ঘুমে
ঘুমের কাছে চলে না অভিনয়
তাই তাে জল মিশিয়ে খেতে হয়
লুপ্ত, অবলুপ্ত হতে হতে
জানাতে হয় নিজের পরিচয়
যখন নীচে পুড়তে থাকে স্টোভ
একলা কথা ছুড়তে থাকে ক্ষোভ
দ্রাঘিমা আর অক্ষরেখা নিয়ে
অন্ধকারে ঘুরতে থাকে গ্লোব।
[A]
এই লেখা কত বার পড়লে আমার মন শান্ত হবে জানা নেই। গত কয়েক বছর ধরে এই লেখা পড়েই চলেছি।
এতো ভালো লাগে বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা, মনে হয় পড়েই যাই… পড়েই যাই।