– তুমি আমার সর্বনাশ করেছ শুভঙ্কর।
কিচ্ছু ভালো লাগে না আমার। কিচ্ছু না।
জ্বলন্ত উনোনে ভিজে কয়লার ধোঁয়া আর শ্বাসকষ্ট
ঘিরে ফেলেছে আমার দশদিগন্ত।
এখন বৃষ্টি নামলেই কানে আসে নদীর পাড় ভাঙার অকল্যাণ শব্দ
এখন জ্যোৎস্না ফুটলেই দেখতে পাই
অন্ধকার শশ্মানযাত্রীর মত ছুটে চলেছে মৃতদেহের খোঁজে।
কিচ্ছু ভালো লাগে না আমার। কিচ্ছু না।
আগে আয়নার সামনে ঘন্টার পর ঘন্টা সাজগোজ
পাউডারে, সাবানে, সেন্টে, সুর্মায়
নিজেকে যেন কেচে ফর্সা করে তোলার মত সুখ।
এখন প্রতিবিম্বের দিকে তাকালেই
সমস্ত মুখ ভরে যায় গোলমরিচের মতো ব্রণে, বিস্বাদে, বিপন্নতায়।
এখন সমস্ত স্বপ্নই যেন বিকট মুখোশের হাসাহাসি
দুঃস্বপ্নকে পার হওয়ার সমস্ত সাঁকো ভেঙে চুরমার।
কিচ্ছু ভালো লাগে না আমার। কিচ্ছু না।
– তুমিও কি আমার সর্বনাশ করনি নন্দিনী?
আগে গোলমরিচের মতো এতটুকু ছিলাম আমি।
আমার এক ফোঁটা খাঁচাকে তুমিই করে দিয়েছ লম্বা দালান।
আগাছার জমিতে বুনে দিয়েছ জ্বলন্ত উদ্ভিদের দিকচিহ্নহীন বিছানা।
এখন ঘরে টাঙানোর জন্যে একটা গোটা আকাশ না পেলে
আমার ভাল লাগে না।
এখন হাঁটা-চলার সময় মাথায় রাজছত্র না ধরলে
আমার ভালো লাগে না।
পৃথিবীর মাপের চেয়ে অনেক বড় করে দিয়েছ আমার লাল বেলুন।
গোলমরিচের মতো এই একরত্তি পৃথিবীকে
আর ভালো লাগে না আমার।
আরও দেখুনঃ পূর্ণেন্দু পত্রী কবিতা সমগ্র
[A]