Skip to content

আমি যাই – শক্তি চট্টোপাধ্যায়

আমি যাই
তোমরা পরে এসো
ঘড়ি-ঘন্টা মিলিয়ে
শাক-সবজি বিলিয়ে
তোমরা এসো
ততক্ষণে চোখের ওপরকার হৈ হৈ
শূন্য মাঠ পার হই
তারপর তো একনাগাড় জঙ্গল
সাপ-খোপ-জলা
সবুজ একগলা
দেয়াল বা দেয়ালের চেয়ে বেশি
মৃত্যু এলোকেশী
সাঁকো
যেখানেই থাকো
এপথে আসতেই হবে
ছাড়ান নেই
সম্বল বলতে সেই
দিনকয়েকের গল্প
অল্প অল্পই
আমি যাই

আকাশ নিঝুম
রুগ্ন ঘুম
ঝাঁট্ নেই, হাসপাতাল ময়লা
ছাগলদুধের গয়লা
কানাগলির দয়জায়
হঠাৎই আকাশ গর্জায়
ম্যানসন, মুখ-চাপা বিদ্যুৎ
জুৎ
লেই, সবটা মন-মরা
পর্দায় চড়া
যাকে বলো, আলো
সেই ভালো
আমি যাই

মস্করার মাঝখানেই বৃষ্টি এলো
এলোমেলো
হাওয়া
কাছে পাওয়া
শক্ত
বিদায়, অশ্রু-ব্যাঙ্কে রক্ত
বাস্তব বটে টাকা
ধুলো-ধোঁয়ায় ঢাকা
সন্ধে
মন দে
যাত্রাকর, জাপটে
আগের ছায়াকে ধর
কিউ—মরণকালেও লাইন
আগু-পিছু ফাইন
মাইনে কাটা
সুতরাং হাঁটা, হাঁটাই
আমি যাই
কার্নিসে ভেজা কাক
বসে থাক্
আমি যাই

পথের প্রথম দিকটাই
গোলমেলে
পেরিয়ে এলে
হিসেব মতন সাত কোশ রোজ
তাহলেই সিদ্ধি
আত্মানং বিদ্ধি –
আমি যাই

শিরীষে ফুল এসেছে
নাগকেশরের গন্ধ পাই
গোটা আকাশটাই
বদলে যেতে বসেছে
গোটা, মানে টুকরো টুকরো
ফাঁক-ফুক্ রো
গঙ্গার কাছেই এক ঝুড়ি
রূপকথার বুড়ি
কলকাতা কাঁথা বিছিয়েছে
জলের মধ্যে বাগান
খান্ খান্
সোনার বেড়া
ঠিক মাথার ওপর টেরা
চাঁদ
আঁধারে বাঁহাতি গড়, ফাঁদ
মেঘ ফাটিয়ে পেঁচা
চেঁচা, যতো জোরেই চেঁচা
চিচিং ফাঁক—
দরজা খুলবে না
চেনাজানা
সব পথই বন্ধ
কলকাতার অন্ধ
কিংবা কলকাতাই
আমি যাই

বাজারটা ঘুরে আসি
ছেলেবেলায় বাঁশি
কিংবা জলছবি
কিনেই তো লুকোবি
মন, আমারি কাছে
সমস্তক্ষণ আছে
পোড়ামুখো মিন্ সে
মাগো, কি তার হিংসে
বরং ইস্টিশানে
যাই যদি তার মানে
হয়—শুধু কি তাই
বরং আমিই যাই

কুড়োর মায়ের কুড়ো
তার চেয়ে নই বুড়ো
যেতে পারবো
ফুটফাট কাজ সারবো
টিউকলে খাবো জল
ব্যামো তো অম্বল
চিরকেলে
আজ না হয় ফেলে
পালাচ্ছি দমছুট্
সব ঝুট্ হ্যায়, ঝুট
তবু
স্মৃতির জবুস্থবু
পাল্লার ক্যাঁচকোঁচ
আওয়াজেই একপোঁচ
কলি ফেরাই
যাই

পিতল কিংবা সোনা
কাছে
যা ছিলো তাই আছে
পকেট, তাও যে ফুটো
দুপাশে স্রেফ্ দুটো
সঙ্গী বলতে সাঁই
যাই ||

[A]

1 thought on “আমি যাই – শক্তি চট্টোপাধ্যায়”

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।