Skip to content

আমাকে যাদুঘরে যেতেই হবে — সৌরভ আহমেদ

আমাকে কেউ আটকাবেন না বলে দিচ্ছি, আমাকে যাদুঘরে যেতেই হবে। না, কোন ধরণের
পরামর্শ আজ আমাকে দেবেন না, পা চাটাচাটির সময় অনেক আগেই গেছে ফুরিয়ে। একটা
দলছুট চিল আমাকে বলেছে, তুমি শুধু শুধু কষ্ট পাচ্ছ। ‘অস্বাভাবিকতাই স্বাভাবিক’ এই সহজ
কথাটিকে তুমি অযথাই ফেলছ জটিল করে। মানবতা খোঁজ মানুষের মধ্যে? তুমি এখনো
বোকার স্বর্গে আছো! যাদুঘরে যাও, দেখবে টেকসই আলমারির ভেতরে মনাবতাকে পাস্তুরি
করে রাখা আছে। আমি তাই যাদুঘরে যাচ্ছি। মানবতা আমাকে দেখতেই হবে, শুনেছি
মানবতার রঙ বউ কথা কও পাখির পালকের মত হয়।
পেটনীতির নামে সমাবেশে কুৎসা রটানো, আত্মরক্ষার নামে গাজায় শিশু হত্যা, মানবতার নামে
পাশবিকতা আর শান্তির নামে দলগঠন শেষে একচোখা হয়ে যাওয়া দেখতে দেখতে আমি ক্লান্ত।
নষ্টদের সঙ্গ আর অন্ধদের প্রণীত আইন মানতে মানতে আমার অনুভূতি আজ ভোতা।
বুকে এখন আর নতুন পশম গজায় না, ঘুষ দিতে ব্যর্থের শরীরে পুলিশের আঘাতের চিহ্ন রবির
কিরণ দেখার আগেই ভিক্টিম মৃত। কিশোরীর স্বপ্নীল চোখ মগজে নতুন পঙক্তির উপলক্ষ হয়ে
আসে না। শেষরাতে গজলের সুর কানে আসল মনে হয় একদা মানুষ ছিলাম। ফেসবুকে
প্রোফাইলে ‘অনিন্দিতা’ নামে যে মেয়েটির ছবি ভোরের আলোর মত রূপ ছড়াচ্ছে, নেপথ্যে
থেকে তার কলকাঠি নাড়াচ্ছে দুষ্ট যুবক।
এই সকল অস্বাভাবিকতাই এখন স্বাভাবিকতার সংজ্ঞা। আমরা এক আজব সময়ে জন্মেছি।
যাদের হৃদয় খুব স্পর্শকাতর পৃথিবীটাকে বুঝতেই তাদের ৭১ বছরে দিতে হয় পা । তারপর
এক কাকডাকা ভোরে ঘুমের মধ্যেই মরে থাকি। অপূর্ণ ইচ্ছাগুলো নেইমার হয়ে জন্ম নেয়
ব্রাজিলের উল্টোপিঠে। এসবের কোন শেষ নেই। ইচ্ছেগুলোর সাথে সাপলুডু খেলতে খেলতে
লুডারু হয়ে গেলে আমরা হাততালি পাই। তারপর খুশি হতে গিয়ে দেখি আমার ভোতা
অনুভূতি কোন নারীকেই কাটতে পারছে না। এই সব ব্যর্থতার সাতকাহনের উত্তর নাকি মানবতার
খালাত বোনের কাছে আছে। আমি তাই এত দৃঢ়তার সাথে যাদুঘরে রওয়ানা দিয়েছি।
সরে যান সামনে থেকে, আমাকে যাদুঘরে পৌঁছতেই হবে সন্ধ্যার আগে।

13 thoughts on “আমাকে যাদুঘরে যেতেই হবে — সৌরভ আহমেদ”

    1. মেহেরবানী করার আমরা কেউ নই । আপনার কবিতার মান আপনার কবিতা প্রকাশের সুযোগ করেছে । তবে বাছাই করার ব্যাপারে এবার থেকে আরও কঠোর হব ।
      কবিতা দেয়ার সময় একবার বানান দেখে নেবেন । কারণ আপনারা যা লেখেন আমি তাই কপি করে দিই । আমার পক্ষে সর্বদা ঠিক করে দেয়া সম্ভব নয় । ধন্যবাদ ।

      1. আপনাদেরকে সম্ভবত আমি বিরক্তিকর পরিস্থিতির মধ্যে রেখেছি। আসলে কবিরা শব্দের কারিগর। চিন্তা এবং কল্পনাকে তারা ভাষারুপ দেন। তারা যদি ভুল করে আমি সেটা কেন যেন মেনেই নিতে পারি না।

      2. ঠিক বলেছেন সর্বদা এটা নিয়ে পড়ে খাকা অসম্ভব।আর কবিরা কবিতা দেয়ার আগে এডিট করে দেবেন এটাতো খুবই স্বাভাবিক এবং কমন।

  1. আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে গিয়ে আমি ভাষার সীমাবদ্ধতা অনুভব করছি। সবই আপনাদের মেহেরবানী। আমার কবিতা ভাল না হলে ওয়েবসাইটে প্রকাশের দরকার নেই। আমি চাই এই নীতি আপনারা সাবার ক্ষেত্রে প্রয়োগ করবেন। অনেক সময় স্বর্থের কারণে অনেকের মুখ বন্ধ হয়ে যায়। আমি নারীবাদ কবিতার মন্তব্যে যা বলেছি তার মূলভাবও আমার ওপরের কথাগুলোর সারাংশ। আহমদ ছফা বাংলা একাডেমি পুরস্কার নেননি। যারা তাকে জানেন না তারা বলেন তিনি পাননি পুরস্কারটা। অথচ কত ব্যবসায়ী ও ছোটমাত্রার লেখককে বাংলা একাডেমি পুরষ্কার দেয়া হয়েছে ও তারা নিয়েছেন!
    পুনশ্চ: গল্পকার হতে গিয়ে কবি হয়ে গেলাম?

  2. ব্যর্থতার সাতকাহন লেখাটায় শুরুতে যে ভুল ছিল আপনারা কষ্ট করে সেটা সেরেছেন সেজন্য আমি যুগপৎ আনন্দিত ও কৃতজ্ঞ।

    1. খশি হলেম দাদা। কৌতুহলটাকে জিঁইয়ে রেখে এবং বিস্ময়টাকে ধরে রেখে খুঁজলে অনেক কবিতাই পাবেন যা আপনাকে নির্বাক করে দেবে। সেসব কবিতার তুলনায় এ কবিতাতো নগন্যই দাদা।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।