Skip to content

অতীতের ছবি – সুকুমার রায়

পর্ব ৫

সমাজে সুদিন এল আবার,
ক্রমে প্রসারিল জীবন তার।
কেশব আপন প্রতিভা বলে
যতনে গঠিল যুবকদলে।
নগরে নগরে হল প্রচার-
“ধর্ম রাজ্যে নাহি জাতিবিচার;
নাহি ভেদ হেথা নারী ও নরে,
ভক্তি আছে যার সে যায় ত’রে।
জাতিবর্ণ- ভেদ কুরীতি যত
ভাঙি দাও চিরদিনের মত।
দেশ দেশান্তরে ধাঊক মন,
সর্বধর্মবাণী কর চয়ন;
ধর্মে ধর্মে নাহি বিরোধ রবে,
মহা সমম্বয় গঠিত হবে।”
পশিল সে বাণী দেশের প্রাণে,
মুগ্ধ নরনারী অবাক মানে ।
নগরে নগরে তুফান উঠে,
ঘরে ঘরে কত বাঁধন টুটে;
ব্রহ্ম নামে সবে ছুটিয়া চলে,
প্রাণ হতে প্রাণে আগুন জ্বলে।
আসিল গোঁসাই ব্যাকুল হয়ে
প্রেমে ভরপূর ভকতি লয়ে।
আসিল প্রতাপ স্বভাব ধীর,
গম্ভীর বচন জ্ঞানে গভীর।
স্বল্পভাষী সাধু অঘোরনাথ
যোগমগ্ন মন দিবসরাত।
গৌরগোবিন্দের সাধক প্রাণ
হিন্দুশাস্ত্রে তাঁর অতুল জ্ঞান।
কান্তিচন্দ্র সদা সেবায় রত
সেবাধর্ম তাঁর জীবন-ব্রত।
ত্রৈলোক্যনাথের১০ সরস গান
নব নব ভাবে মাতায় প্রাণ।
আরো কত সাধু ধরমমতি
বঙ্গচন্দ্র১১ আদি প্রচার-ব্রতী
একসাথে মিলি প্রেমের ভরে
প্রেমপরিবার গঠন করে।
কাল কিবা খাবে কেহ না জানে,
আকুল উৎসাহ সবার প্রাণে ।
নূতন মন্দির নব সমাজ
নব ভাবে কত নূতন কাজ।
দিনে দিনে নব প্রেরণা পায়,
উৎসাহের স্রোত বাড়িয়া যায়।
সমাজ-চালনা বিধি-বিচার
কেশবের হাতে সকল ভার;
কেশবপ্রেরণা সবার মূলে
তাঁর নামে সবে আপনা ভুলে।
ধন্য ব্রহ্মানন্দ যাঁহার বাণী
শিরে ধরে লোকে প্রমাণ মানি।
যাঁহার সাধনা আজিও হেরি
রয়েছে সমাজ জীবন ঘেরি ;
যাঁহার মূরতি স্মরণ করি,
যাঁহার জীবন হৃদয়ে ধরি,
শত শত লোক প্রেরণা পায়-
আজি ভক্তিভরে প্রণমি তাঁয়।
আবার বহিল নূতন ধারা,
সমাজের প্রাণে বাজিল সাড়া;
ভাসি বহুজনে সে নব স্রোতে
বাহির হাইল নূতন পথে।
মিলি অনুরাগে যতন ভরে
এই “সাধারণ” সমাজ গড়ে।
ওদিকে কেশব নূতন বলে
বাঁধিল আবার আপন দলে।
নব ভাবে “নববিধান” গড়ি,
নূতন সংহিতা রচনা করি,
ভগ্নদেহ লয়ে অবশপ্রায়,
খাটিতে খাটিতে ত্যজিল কায়।

Pages: 1 2 3 4 5 6

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Ads Blocker Image Powered by Code Help Pro

অ্যাড ব্লক পাওয়া গেছে!!

সত্যি বলছি, আমরাও বিজ্ঞাপন পছন্দ করিনা! কিন্তু বিজ্ঞাপন এই ওয়েবসাইটকে বিনামূল্যে চালাতে সাহায্য করে! 

দয়া করে অ্যাড ব্লকার বন্ধ করে পুনরায় লোড করুন।